রাজধানীর মহাখালী আমতলী সড়কের পাশ থেকে রোববার (৩০ মে) দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে একটি নীল রঙের ড্রামের ভেতরে বস্তাবন্দি অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে মৃতদেহের সঙ্গে মাথা ছিল না। এছাড়া দুই হাত ও দুই পা বিচ্ছিন্ন ছিল। সেগুলোও লাশের সঙ্গে ছিল না। লাশটি উদ্ধারের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।
খণ্ডিত লাশের রহস্য উদঘাটনে তদন্তে নামে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে রহস্য উদঘাটন করে ডিবি পুলিশ। নিহত ওই ব্যক্তির নাম নাম ময়না। দ্বিতীয় বিয়ে করায় স্বামী ময়না মিয়াকে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে অচেতন করে হত্যা করেন প্রথম স্ত্রী ফাতেমা খাতুন। ডিবির কাছে ফাতেমা স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। ডিবি কর্মকর্তারা জানান, বিচ্ছিন্ন দেহ, বিচ্ছিন্ন দুই হাত এবং দুই পা উদ্ধারের পর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগ খণ্ডিত লাশের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। জানতে পারে, এই ব্যক্তির নাম ময়না মিয়া। বাবার নাম তোতা মিয়া। গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ সদরের উত্তর বৌলাই। ডিবি গ্রামের বাড়ির ঠিকানায় গিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী নাসরিন আক্তারের সঙ্গে কথা বলে তার স্বামীর নিখোঁজ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। ডিবি কর্মকর্তারা জানান, খোঁজ নিয়ে তারা জানতে পারেন ময়না মিয়া কয়েকদিন ধরে তার প্রথম স্ত্রী ফাতেমার সঙ্গে কড়াইল বস্তি এলাকায় বসবাস করছিলেন। এই তথ্যের ভিত্তিতে বনানীর ৪ নম্বর রোডের ১৮ নম্বর বাসার একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির অফিস থেকে ফাতেমাকে আটক করা হয়।
আটকের পর তিনি পুরো ঘটনার বর্ণনা দেন। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই ময়না মিয়ার শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ জানান, স্বামী ময়নার বুকের উপর উঠে ফাতেমা ধারালো চাকু দিয়ে ময়নার গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে লাশ ছয় টুকরা করে শরীরের অংশ মহাখালী কাচাবাজারের কাছে ফেলেন। দুই হাত ও দুই পা ফেলেন মহাখালী বাস টার্মিনালে। আর মাথাটি ফেলেন বনানী ১১ নম্বর ব্রিজের পাশে। তারপর বাসায় এসে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে থাকেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।